লিপ কিস করার নিয়ম ও উপকারি
কিস ভীষণ রোমান্টিক এবং আদুরে একটা জিনিস। বলতে গেলে প্রিয়জনকে ভালোবাসার সবচেয়ে মোক্ষম হাতিয়ার। চুম্বনের মাধ্যমেই আপনি আপনার সঙ্গীর প্রতি ভালবাসা, বিশ্বাস এবং ভরসাকে প্রকাশ করতে পারেন। এমনকি তাঁর মনে ভরসা জোগানোর জন্য তাঁর কপালে আপনার ঠোঁটের ছোট্ট একটা স্পর্শই যথেষ্ট। তবে দেশ-কাল আর পাত্র ভেদে কিস বা চুম্বন হতে পারে অনেক রকম। তাই নিম্নে চুম্বনের প্রকারভেদ তুলে ধরা হল।
নতুন স্বামী/স্ত্রী বা খুব সিরিয়াস টাইপের কোন প্রেমিক/প্রেমিকার জন্য এই ধরনের কিস খুবই ভাল। প্রথমেই সঙ্গীকে কিস করুন জাপটে ধরে, এইবার কিস করতে করতে তাকে আস্তে আস্তে পিছনের দিকে ঠেলে দিন যাতে সে প্রায় শোয়া বা আধশোয়া হয়ে যায়। কিন্তু স্থিতি কিংবা গতি, যেকোনো অবস্থায় কিস করতে থাকুন আর ভালবাসুন মনভরে। তবে কিস করার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিন আপনার সঙ্গীর পিছনে চেয়ার, বিছানা কিংবা অন্য কিছু আছে কিনা। নতুবা আপনার সঙ্গী পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেতে পারে।
Breath Kiss
খুব রোমান্টিক এবং কিছুটা উত্তেজক বলা যেতে পারে এই ধরণের চুম্বনকে। প্রথমে আলতো করে সঙ্গীর ঠোটে ঠোঁট ছোয়ান। তারপর নাক দিয়ে সঙ্গীর উত্তপ্ত নিঃশ্বাস টেনে নিন নিজের কাছে, আর দুঠোঁটের ফাঁক দিয়ে তা আবার পৌঁছে দিন সঙ্গীর ঠোঁটের কিনারায়। অতঃপর ভালবাসা কিছুটা এরোটিক হতে পারে।
Trade-Off Kiss
পৃথিবীতে চকলেট, আঙ্গুর কিংবা চেরী এইরকম জিনিসের সবচেয়ে শৈল্পিক ব্যাবহার হয়েছে বোধহয় এই চুম্বনের কারণেই। প্রথমেই মুখে পুরে নিন এই রকম কিছু তারপর কিছুটা খেয়ে তা চালান করে দিন সঙ্গীর ঠোঁটে, যখন আপনার সঙ্গী এটি মুখে পুরে নিবে, তখন আপনার ঠোঁট ছোঁয়ান সঙ্গীর ঠোঁটে। অবশেষে সঙ্গী যখন চকলেট কিংবা চেরী আপনার ঠোঁটে চালান করে দিবে তখন আবার এইটি মুখে পুরে নিন, আবার দিন, আবার নিন। এইভাবে চলতে থাকুক অনেকক্ষণ আঙ্গুর কিংবা চকলেটের শৈল্পিক কার্যক্রম।
Surprise Kiss
এধরনের চুম্বন তখনই খাবেন যখন আপনার সঙ্গী ঘুমিয়ে আছে কিংবা এইমাত্র ঘুমোবার উদ্দেশ্যে চোখ বন্ধ করল। সঙ্গীর শরীরে হাত বুলিয়ে দিন আলতো করে আর চুমো দিন ঠোঁটে, চাইলে আলতো করে কামড়ও দিতে পারেন। চুমো খেতে পারেন সঙ্গীর চোখেও গভীর ভালবাসা কিংবা মমতায়। হঠাৎ এইরকম ভালোবাসায় আপনার সঙ্গী কিছুটা Surprised তো হবেই সাথে আপনাকেও চুমো খাবে।
Spiderman Kiss
নাম দেখে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। উপর থেকে মাথা নিচের দিকে রেখে প্রেমিকাকে কিস করা ঝুলন্ত স্পাইডারম্যানের কথা মনে আছে তো?? ওইটাই স্পাইডারম্যান কিস। আপনি স্পাইডারম্যানের মত ঝুলাঝুলি না করেও এই কিস করতে পারবেন আপনার প্রেমিকা/স্ত্রীকে। ধরুন, প্রেমিকা/স্ত্রী বসে আছে চেয়ারে। আপনি চেয়ারের পিছন থেকে এসে প্রেমিকাকে স্পর্শ করেলেন আর মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে আসেন প্রেমিকা/স্ত্রীর মুখ বরাবর আর ঠোঁটে ছোঁয়ান ঠোঁট। অথবা বিছানার একপ্রান্তে, বিশেষ করে নিচের দিকে আপনার প্রেমিকা/স্ত্রীকে শোয়ান। এরপর আপনি বিছানার উপর দিকে এসে উল্টো হয়ে আপনার মুখটি আপনার প্রেমিকা/স্ত্রীর মুখ বরাবর রাখুন আর কিস করতে থাকুন স্পাইডারম্যানের মত। ব্যাস হয়ে যাবে স্পাইডারম্যান কিস।
Allover Kiss
প্রথমে সঙ্গীর কপালে চুমো দিন। তারপর নাক, গাল, ঠোঁট, গলাতে চুমো খেতে থাকেন ধীরে ধীরে আর সঙ্গীকে কানে কানে বলেন কত ভালবাসেন তাকে। দেখুন সঙ্গীও কতটা ভালবেসে জড়িয়ে ধরে আপনাকে। তবে একটা কথা। চুমো খালি ঠোঁটেই খেতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তাই এই চুম্বনটির নাম Allover Kiss.
Ear Sealing Kiss
এই চুম্বনটি অনেক স্পেশাল কোন দিনের জন্য জমিয়ে রাখুন। বিশেষ দিনে প্রেমিকা/স্ত্রীর কানের পাশে মুখ নিয়ে বলে ফেলুন যে তাকে অনেক ভালবাসেন আর সারাটা জীবন তার হাতে হাত রেখেই কাটাবেন। অতঃপর কানে একটি চুমো দিয়ে সিলগালা করে দিন আপনার ভালোবাসার এই মেসেজ।
Butterfly Kiss
এটি শুধুমাত্র বিবাহিত দম্পতিদের জন্য। আপনার সঙ্গী আর আপনি যখন নিত্যদিনের স্বাভাবিক কাজ কর্ম করছেন তখন হঠাৎ সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরুন। দুহাতে তার মুখ চেপে ধরে তার নাকে নাক ঘষুন, এরপর ঠোঁটে ঠোঁট।
French Kiss
পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় চুমো। এটি সম্পর্কে বলার কোন প্রয়োজনও নেই। এই চুমো সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানেন। তবে ফেঞ্চ চুম্বনের সময় রক্তপাত যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। কারণ এর ফলে আপনি যার সাথে কিস করছেন, তার যদি এইডস থাকে, তাহলে চুম্বনের সময় রক্তপাত হলে আপনার এইডস হবার সম্ভাবনা শতভাগ। বিশেষ করে ফ্রেঞ্চ চুমোতে উভয়ের ঠোঁট কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এধরণের চুমোতে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
ভালবাসা প্রদর্শন করার জন্য তাঁর ঠোঁটে একটা চুম্বই অনেক কিছু বলে দিতে সক্ষম। কিন্তু আপনার সঙ্গীকে চুম্বন করার আগে এই কথাগুলি অবশ্যই মাথায় রাখা দরকার।
১. মুখের দুর্গন্ধ
যদি আপনার মুখ থেকে খারাপ গন্ধ বের হয়, তাহলে তা আপনাদের একাকী মুহূর্তটিকে নষ্ট করে দিতে পারে। তাই চুম্বন করতে যাওয়ার আগে ভালো ভাবে ব্রাশ করে মাউথ ফ্রেসনার লাগিয়ে তবেই যান। তাহলে আর কোনও সমস্যা হবে না।
২. গায়ে পারফিউম লাগান
চুম্বনের সময় আপনার গায়ের সুগন্ধ থাকা খুব দরকার। কারণ চুম্বনের Kiss সময় আপনার গায়ের গন্ধ আপনার সঙ্গীর নাকে যাবে। তাই আপনি যদি এমন কোনও ভালো গন্ধযুক্ত পারফিউম লাগান তাহলে তা আপনার সঙ্গীকে অনেক বেশি আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে।
৩. সহমতের ওপর জোড় দিন
চুম্বন Kiss করলেও অবশ্যই আপনার সঙ্গীর মত নিন। যদি আপনার সঙ্গী মত না দেন তাহলে তার কোনও দরকার নেই। কারণ এই ক্ষেত্রে আপনার সঙ্গে, সঙ্গীর মত থাকাটাও খুবই জরুরি।
৪. চোখ বন্ধ করুন
গাঢ় এবং উৎসাহী প্রেমিক-প্রেমিকাদের চুম্বনের সময় চোখ বন্ধ করার কোনও দরকার পরে না। কারণ চুম্বন এবং ভালবাসা যদি সত্যিকারের হয়ে থাকে তাহলেই চুম্বন মন থেকে হয়ে থাকে। এর জন্য আলাদা করে চোখ বন্ধ করার কোনও দরকার পরে না। কারণ চোখ স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বন্ধ হয়ে যায়।
৫. জোর করবেন না
যদি আপনার সঙ্গী partner বেশি সময় ধরে চুম্বনে সাবলীল না হন তাহলে তাঁকে জোড় করার কোনও দরকার নেই। তিনি যাতে স্বাছন্দ্যবোধ করেন তাই করবেন।
কিসের উপকারিতা
চুমুর মাধ্যমে মিলতে পারে ৫ ধরনের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা। এগুলো জেনে নিন।
১. বন্ধন সুদৃঢ় করে : দম্পতিদের মধ্যে সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করে লিপ কিস। চুমুর সময় উভয়ের দেহে অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসৃত হয় যা বন্ধন দৃঢ় করে।
২. যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করে : মানুষের নানা সমস্যা দূর করে যৌনতা। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং হৃদযন্ত্রের দেখভাল করে। আর যৌনতায় আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করে চুমু।
৩. রোগ-বালাই দূর করে : বিজ্ঞানীরা বলেন, চুমুর মাধ্যমে দুজনের মধ্যে সুষ্ঠু বিপাকক্রিয়া শুরু হয়। বিশেষ করে চুমুর মাধ্যমে যদি ঘটনা যৌনতার দিকে গড়ায়, তবে বহু ক্ষতিকর ভাইরাসের পতন ঘটে।
৪. সুখী করে তোলে : চুমুর মাধ্যমে এন্ডোফিনস এবং এন্ডোরফিনস হরমোনের ক্ষরণ ঘটায় যা মানুষকে সুখী করে তোলে। অর্থাৎ, চুমুর মাধ্যমে মানুষ সুখকর অনুভূতি পায়।
৫. ব্যথা দূর করে : চুমুর কারণে দেহে অ্যান্ড্রেনালাইন হরমোনের ক্ষরণ ঘটে। এই হরমোন ব্যথা নাশ করে। চুমুর মাধ্যমে মাথাব্যথার মতো যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মেলে।
কিসের অপকারিতা
উপকারিতার পাটাপাশি চুমু খাওয়ার ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। চুমুতে ভালোবাসা বাড়ে, ভালোবাসা ছড়ায় এমনি জানা ছিল, কিন্তু চুমুর মধ্যে দিয়ে ব্যাকটেরিয়ার আদানপ্রদান হয় তা কি জানা আছে? নতুন এক গবেষণা বলছে মাত্র ১০ সেকেন্ডের গভীর চুমুতে ৮ কোটি ব্যাকটেরিয়া একজনের লালার সঙ্গে অন্যজনের মুখে প্রবেশ করে। যে যুগল দিনে যতবার বেশি চুমু খায় তাদের মুখের মধ্যের মাইক্রোব্যাকটেরিয়ার তত বেশি মিল থাকে।
নেদারল্যান্ডসের অরগানাইগেশন ফর অ্যাপলায়েড সায়েন্টিফিক রিসার্চের গবেষক রেমকো কোর্ট আমস্টারডামের মাইক্রোপিয়া (পৃথিবীর প্রথম মাইক্রোবসদের মিউজিয়াম)-এর সঙ্গে যৌথভাবে ২১ জনের যুগলের উপর একটি পরীক্ষা চালিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে চুমু খাওয়ার সময় তাদের আচরণ, কত ঘন ঘন তারা চুমু খান এই সব প্রশ্ন সহ একটি তালিকা পূরণ করতে দেওয়া হয়েছিল এই ৪২জনকে। এরপর প্রতি যুগলের যেকোনো একজনকে বেছে নিয়ে বিশেষ একধরণের ব্যাকটেরিয়া ভর্তি প্রোবায়োটিক পানীয় খেতে দেওয়া হয়েছিল। এরপর তাদের সঙ্গি বা সঙ্গিনীকে ঘন চুমু খেতে বলা হয়। একবারের ঘন চুমুর পর দেখা গেছে যিনি ওই পানীয় খাননি তার মুখের লালার মধ্যে প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার (ক্ষতিকারক নয় এমন ব্যাকটেরিয়া)সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। হিসাব করে দেখা গেছে মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যে একজনের মুখ থেকে অন্যজনের মুখে কমবেশি আট কোটি ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করেছে। কোর্ট জানিয়েছেন তাঁদের এই পরীক্ষা শেষে দেখা গেছে যে যুগল যত ঘন ঘন নিবিড় চুমু খান তাদের লালার মাইক্রোবায়োটা (ব্যাকটেরিয়া বসতি) একই রকম হয়। গড়ে দিনে অন্তত ৯ বার চুমু খেলে মুখের মাইক্রোবায়োটা একই রকম হয়ে যায়। মানুষের শরীরে গড়ে ১০০ ট্রিলিয়ন উপকারী মাইক্রোঅরগানিসম থাকে। এই মাইক্রো-অরগানিজম খাবারের পাচন, পুষ্টি সংশ্লেষ ও রোগপ্রতিরোধে অপরিহার্য। মুখের মধ্যে কমবেশি ৭০০ ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে।
No comments:
Post a Comment